সুদানে যুদ্ধ (২০২৩-বর্তমান)

২০২৩ সুদান সংঘাত হল সুদানের সামরিক সরকারের প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর মধ্যে একটি চলমান সশস্ত্র সংঘাত। এটি ২০২৩ সালের ১৫ই এপ্রিল শুরু হয়েছিল, যখন মূলত রাজধানী শহর খার্তুম ও দারফুর অঞ্চল সহ দেশজুড়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। এই সংঘাতের ফলে এই পর্যন্ত কমপক্ষে ১২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত ও ৩৩ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

২০২৩ সুদান সংঘাত
মূল যুদ্ধ: গণতন্ত্রে সুদানী রূপান্তর
১৭ এপ্রিল ২০২৪ পর্যন্ত সামরিক পরিস্থিতি      সুদানী সশস্ত্র বাহিনী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত      দ্রুত সহায়তা বাহিনী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত (বর্তমান সামরিক পরিস্থিতির আরও বিস্তারিত মানচিত্রের জন্য, এখানে দেখুন)
তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০২৩ –  (২০২৩-০৪-১৫ – ) – বর্তমান (১ বছর ও ২ দিন) অবস্থান খার্তুম এবং সুদানের অন্যান্য কৌশলগত শহর অবস্থা চলমান অধিকৃত এলাকার পরিবর্তন দ্রুত সহায়তা বাহিনী রাজধানী খার্তুম এবং দারফুর অঞ্চলের কিছু অংশ দখল করেছে, যার মধ্যে রয়েছে খার্তুম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, নিয়ালা, কাবকাবিয়া, জেনিনা মূল সরকারি স্থানসমূহের বিতর্কিত নিয়ন্ত্রণ
বিবাদমান পক্ষ
দ্রুত সহায়তা বাহিনী দ্বারা সমর্থিত: লিবীয় জাতীয় সেনাবাহিনী ওয়াগনার গ্রুপ (আরএসএফ দ্বারা অস্বীকার করা হয়েছে)	সুদানী সশস্ত্র বাহিনী দ্বারা সমর্থিত: মিশর
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী
মোহাম্মদ হামদান দাগালো	আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান
শক্তি
৭০,০০০–১,৫০,০০০	১,১০,০০০–১,২০,০০০
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি
১২,০০০+ নিহত ৩৩,০০০+ আহত ৫৮,৫৫,৮৪৮ জন অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তচ্যুত ১৫,২৩,০০০+ মানুষ শরণার্থী

আধাসামরিক দ্রুত সহায়তা বাহিনী (আরএসএফ) দ্বারা গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থানগুলিতে হামলার মাধ্যমে লড়াই শুরু হয়েছিল। খার্তুম সহ সুদান জুড়ে বিমান হামলা, কামান ও ভারী গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে। আরএসএফ নেতা মোহাম্মদ হামদান দাগালো এবং সুদানের ডি ফ্যাক্টো নেতা ও সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান উভয়ই ২০২৩ সালের ১৫ই এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ সামরিক সদর দফতর, রাষ্ট্রপতির প্রাসাদ, খার্তুম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, বুরহানের সরকারি বাসভবন এবং এসএনবিসি সদর দফতর সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থানের উপরে নিয়ন্ত্রণ দাবি করেছেন।

পটভূমি

মূল নিবন্ধ: সুদানের ইতিহাস

সুদানের সংঘাতের ইতিহাসে জাতিগত উত্তেজনা, ধর্মীয় বিরোধ ও সম্পদ নিয়ে প্রতিযোগিতা রয়েছে। রাষ্ট্রটির আধুনিক ইতিহাসে কেন্দ্রীয় সরকার ও দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে দুটি গৃহযুদ্ধে ১.৫ মিলিয়ন মানুষ নিহত হয়েছিল এবং দারফুরের পশ্চিমাঞ্চলে একটি অব্যাহত সংঘাত দুই মিলিয়ন মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে এবং ২,০০,০০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে। ১৯৫৬ সালে স্বাধীনতার পর থেকে, সুদানে পনেরটিরও বেশি সামরিক অভ্যুত্থান হয়েছে এবং গণতান্ত্রিক বেসামরিক সংসদীয় শাসনের সংক্ষিপ্ত সময়ের সঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রজাতন্ত্রের অস্তিত্বের জন্য সামরিক বাহিনী দ্বারা শাসিত হয়েছে।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

মূল নিবন্ধ: ২০১৯-২০২৬ গণতন্ত্রে সুদানী রূপান্তর

প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ও সামরিক শক্তিশালী নেতা ওমর আল-বশির দেশের পশ্চিমে একটি যুদ্ধের সভাপতিত্ব করেছিলেন এবং দারফুর অঞ্চলে রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সহিংসতার তদারকি করেছিলেন, যার ফলে যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছিল। দারফুর সংঘাতের মূল ব্যক্তিত্বদের মধ্যে ২০২৩ সালের সংঘর্ষের সময় দ্রুত সহায়তা বাহিনীর (আরএসএফ) কমান্ডার মোহাম্মদ হামদান "হেমেদতি" দাগালো অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। একটি অভ্যুত্থান ব্যাপক নাগরিক অবাধ্যতার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে আল-বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল, যা প্রায়শই সুদানী বিপ্লবের প্রথম পর্যায় হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লা হামদোকের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন যৌথ বেসামরিক-সামরিক ঐক্য সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। যাইহোক, সুদানী সশস্ত্র বাহিনীর (এসএএফ) নেতা আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান ও আরএসএফ নেতা দাগালোর নেতৃত্বে ২০২১ সালের অক্টোবর মাসের একটি অভ্যুত্থানে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করে। আল-বুরহান পরবর্তী জান্তার একচেটিয়া ক্ষমতার কার্যকর নেতা হয়ে ওঠেন।

দ্রুত সহায়তা বাহিনী

আরএসএফ হল দারফুর যুদ্ধের সময় পরিচালিত জানজাওয়েদ মিলিশিয়াদের শিকড় সহ একটি আধাসামরিক সংস্থা। এটি আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১৩ সালে রাষ্ট্রপতি বশির দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল, এবং বাহিনীর নেতৃত্বে দাগালো ছিলেন। তারা ২০১৯ সালের জুন মাসে খার্তুম গণহত্যার সময় গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকারীদের উপর তাদের দমন-পীড়নের জন্য কুখ্যাতি অর্জন করেছিল। বশির শাসন ব্যবস্থাটি আরএসএফ সহ বেশ কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠীকে সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে থেকে তার নিরাপত্তার জন্য হুমকি প্রতিরোধ করার জন্য প্রসারিত করার অনুমতি দেয়, এটি এমন একটি অনুশীলন যা "অভ্যুত্থান-প্রতিরোধী" নামে পরিচিত। আরএসএফ ও সেনাবাহিনী উভয়ই স্বর্ণের বিনিময়ে রাশিয়া থেকে নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ ও অস্ত্রের চালান থেকে উপকৃত হয়েছে।